কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । প্রশ্ন - উত্তর । kothao aamar hariye jabaer nei mana
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
গানঃ কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার
রচয়িতাঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কবি পরিচিতি : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ গীতিকার ও এবং সুরকার।
তাঁর রচিত গানগুলি 'গীতবিতান' নামক বইতে কয়েকখণ্ডে বিধৃত রয়েছে। ওই গানগুলির স্বরলিপি 'স্বরবিতান' নামের বইতে কয়েক খণ্ডে বিধৃত রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ রচিত গানগুলি রবীন্দ্রসংগীত নামে পরিচিত।
কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে!
মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা মনে মনে।
তেপান্তরের পাথার পেরোই রূপকথার,
পথ ভুলে যাই দূর পারে সেই চুপ্-কথার—
পারুলবনের চম্পারে মোর হয় জানা মনে মনে।
সূর্য যখন অস্তে পড়ে ঢুলি মেঘে মেঘে আকাশ-কুসুম তুলি।
সাত সাগরের ফেনায় ফেনায় মিশে
আমি যাই ভেসে দূর দিশে—
পরীর দেশে বন্ধ দুয়ার দিই হানা মনে মনে।
মর্মার্থ:- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বহু গান রচনা করেছেন, কখনও তা প্রকৃতির রূপের বৈচিত্র্য নিয়ে কখনও তা পূজা বা ভালোবাসা নিয়ে। এই গানের মধ্যে কবি তার মনের সুদুরপ্রসারী ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন মনের ইচ্ছার মধ্যে নিয়ে আমরা যে কোনো জায়গায় চলে যেতে পারি, তা কোনো বারণ নেই, তাই কবি গানের সুরের মাধ্যমে নিজের ডানা মেলে নিয়েছেন। এই মনে মনেই তিনি রূপকথার রাজ্যের তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে যান, সুরের জগতের মধ্যে পথ ভুলে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। মনে মনেই তিনি সাত ভাই চম্পা ও পারুল বোনের কথা করুনা রে জানতে পারেন। বিকেলের সূর্য যখন অস্ত যায়, মেঘে মেঘে কত কী কথা ভেবে সাত সাগরের ঢেউয়ে দিতে তিনিও যেন কখন দূর বিশ্বায় ভেসে যান। যে পরির দেশের কল্পনার জগতের দ্বার বন্ধ থাকে তাকেও তিনি মনে মনে খুলে ফেলেন। শিশুমনের কল্পনার জগতের এক অপূর্ব ছবি কবি এই গানের মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন।
পাঠাংশের ব্যাকরণ ও নির্মিত বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
শব্দার্থ :- মানা-নিষেধ, বারণ। মেনে ছড়িয়ে প্রসারিত করে। দিলেম—দিলাম, ডানা—পাখনা, তেপান্তর–রূপকথার জগতের কল্পিত এক বিশাল মাঠ। রূপকথা- শিশুদের জন্য কল্পিত গল্প। চম্পন্ন—চাপা ফুল। মোর-আমার। ঢুলি—ঢলে পড়া। আকাশ-কুসুম – আজগুবি ভাবনা। দিশে–দিশায়, গন্তব্যে। দুয়ার—দ্বার, করজা। হানা—পৌছানো। পাথার—সমুদ্র, বিস্তীর্ণ জলরাশি।
বাক্য রচনা
মানা – মা পড়ার সময় খেলা করতে আমায় মানা করেছেন।
মেলে—আকাশে ডানা মেলে পাখি উড়ে যায়।
মনে মনে - আমরা কত কথা মনে মনে ভেবে নিই।
ডানা–পাখির মতো ডানা থাকলে আমি যেখানে খুশি উড়ে যেতাম।
তেপান্তরের–তেপান্তরের মাঠে গাছের উপর দৈত্য-দানব থাকে।
জানা–এই গানটি আমার জানা আছে।
সূর্য—বৃষ্টি থামার শেষে এবারে সূর্য উঠেছে।
মেঘে মেঘে – বাদল দিনের আকাশ মেঘে মেঘে ঢেকে আছে।
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রঃ ১। মনে মনে কীসের মানা নেই?
উঃ। মনে মনে আমার হারিয়ে যাওয়ার কোনো মানা নেই।
প্রঃ ২। কীসের ডানা মেলে দিলেম?
উঃ। গানের সুরের ডানা মেলে দিলেম।
প্রঃ ৩। রূপকথার কী পেরিয়ে যাই?
উঃ। রূপকথার তেপান্তরের পাথার পেরিয়ে যাই।
প্রঃ ৪। দূর পারের কী ভুলে যাই?
উঃ। দূর পারের পথ ভুলে যাই।
প্রঃ ৫। সূর্য কোথায় ঢলে পড়ে?
উঃ। সূর্য অস্তে ঢুলে পড়ে।
প্রঃ ৬। কীসে মিশে গিয়ে কবি দূর দেশে চলে যান?
উঃ। সাত সাগরের ফেনায় মিশে গিয়ে কবি দূর দেশে ভেসে যান।
প্র: ৭। কবি কোথায় কীভাবে হানা দেন?
উঃ। কবি মনে মনে পরির দেশের বন্ধ দুয়ারে হানা দেন।
প্র: ৮। কবি মেঘে মেঘে কী তোলেন?
উঃ। কবি মেঘে মেঘে আকাশ কুসুম তোলেন।
প্র: ৯। কবির মনে মনে কার কথা জানা হয়?
উঃ। মনে মনে কবির পারুলবনের চম্পার কথা জানা হয়।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন