নরহরি দাস। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী । Narahari Das । upendra kishore roy chowdhury
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
গল্প :- নরহরি দাস
লেখকঃ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
লেখক পরিচিতি ও বাংলা সাহিত্যের খ্যাতনামা লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ১৮৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর লেখা কয়েকটি জনপ্রিয় বই হলো টুনটুনির বই, গুপী গাইন বাঘা বাইন, ছেলেদের রামায়ণ ও ছেলেদের মহাভারত প্রভৃতি। ১৯১৩ সালে তিনি ছোটোদের জন্য 'আদেশ' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকার প্রচ্ছদ ও অন্যান্য ছবি তিনি নিজের হাতে আঁকতেন। বাংলায় আধুনিক মুদ্রণশিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ বলা যায় তাঁকে। প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায় ছিলেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র। ১৯১৫ সালে এই খ্যাতনামা লেখকের জীবনাবসান হয়। আলোচ্য গল্পটি লেখকের টুনটুনির বই থেকে নেওয়া হয়েছে।
নরহরি দাস গল্পের সারসংক্ষেপ
সারসংক্ষেপ - মাঠের পাশে এক বনের ধারে এক মস্ত পাহাড়ের এক গর্ভে একটি ছাগলছানা তার মায়ের সঙ্গে থাকত। সে ছিল ছোটো, বাইরে যেতে চাইলেই তার মা তাকে বাঘ-ভালুকে ধরবে, সিংহ খেয়ে ফেলবে হলে ভয় দেখাতো, এরপর যখন সে একটু বড়ো হল তার ভয়ও কমলো তখন সে একটি গর্ভের বাইরে চলে এল। সেখানে সে একটি ষাঁড়তে ঘাস খেতে দেখল, সে ভাবল ষাঁড়টিও বুঝি তার মতো ছাগল। খুব ভালো জিনিস খেয়ে এত বড়ো হয়েছে। ছাগলছানাটি ষাঁড়কে কী খাবার খায় প্রশ্ন করায় সে বলে বনের ভিতর চমৎকার ঘাস আছে সেই খেয়ে সে এত বড়ো হয়েছে। সেখানে গিয়ে ছাগলছানাটি এমন ঘাস খেল, পেট ভারী হয়ে আর সে চলতে পারে না। এদিকে সন্ধ্যে হয়ে এলে সে একটি গর্ত দেখে তার ভিতরে ঢুকে রইল। এদিকে সে গর্তটা ছিল এক শিয়ালের। সে তার মামা বাঘের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেয়ে অনেক রাতে ফিরে দেখে গর্তের ভিতর কালো মতন কী একটা রাক্ষস ঢুকে রয়েছে। ভয়ে শিয়ালটিজিজ্ঞাসা করে গর্তে কে? ছাগলছানাটির ছিল ভারী বুদ্ধি। সে সুর করে বলে আমি সিংহের মামা নরহরি দাস। পঞ্চাশ বাঘে মোর এক গ্রাস। এই শুনে ভয়ে শিয়াল এক ছুটে বাঘের কাছে ফিরে গেল। বাঘ আশ্চর্য হয়ে গেল। শিয়াল তখন হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, মামা আমার গর্তে এক নরহরি দাস এসেছে যে কিনা এক গ্রাসে পঞ্চাশটা বাঘ খায়। শুনে বাঘ ভয়ানক রেগে বলল বটে চলো দেখি। শিয়াল বলল মামা সে যদি সেখানে আমাকে খেতে আসে আমি তো তোমার মতন ছুটতে পারব না, তাই তুমি আমাকে লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে চলো। এমনভাবে শিয়ালকে লেজে বেঁধে বাঘ গর্তের কাছে এল। ছাগলছানাটি দূর থেকে তা দেখতে পেয়ে বলল, দুর হতভাগা। তোকে দশটা বাঘ আনতে বললুম, তুই একটা বাঘ নিয়ে এলি। ভয় পেয়ে বাঘ ভাবলে শিয়াল নিশ্চয়ই তাকে ভুলিয়ে নিয়ে এসেছে নরহরি দাসকে খেতে দেওয়ার জন্য। সে পঁচিশ হাত লম্বা এক লাফ দিয়ে শিয়ালকে সুদ্ধ নিয়ে পালাল। শিয়াল বেচারার মাটিতে আছাড় খেয়ে, কাঁটার আঁচড় খেয়ে, ক্ষেতের আলে ঠোকর খেয়ে নাজেহাল অবস্থা হলো। এভাবে সারারাত বাঘ ও শিয়াল ছুটোছুটি করে সারা হল, সকাল হতে ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এল।
● পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ ও নির্মিতি বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
শব্দার্থ :- মস্ত-বিরাট। জন্ম - জীব। চমৎকার- সুন্দর। ঢের– বেশি। রাক্ষস — দৈতা। গ্রাস—হাত দিয়ে মুখে তোলা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য। আশ্চর্য—অবাক । সর্বনাম—বিপদ। আস্পর্ধা-স্পর্ধা শব্দের কথ্য রূপ, দস্ত। কড়ি—বিনিময়ের মাধ্যম, একধরনের মুদ্রা, কপর্দক। ফাঁকি — ভুলিয়ে। ক্ষেত্র-জমি। আল—একটি জমি থেকে তার পাশের জমিকে আলাল করার জন্য নির্মিত ছোটো বাঁধ। ঠোক্কর ধাক্কা, হোঁচট। সারা হলো এখানে অস্থির হলো। সাজা-শাস্তি।
বিপরীত শব্দ : মন্ত—ক্ষুদ্র। বড়ো ছোটো বাইরে—ভিতরে। ভয়—সাহস। কমে-বেড়ে। ভালো-মন্দ। ভারী—হালকা। কাল-আজ। ঢুকে বেরিয়ে। বুদ্ধিমান-বুদ্ধিহীন। লম্বা বেঁটে। ঘন-তরল। বেঁধে খুলে। রাগ-খুশি।দাঁড়ায় - বসে। দূর–দিকট। ব্যস্ত–সুস্থির।
বাক্য রচনা :
উকি-ছেলেটি জানালার ফাঁক দিয়ে উকি মেরে দেখল।
শিং-গোরু, ছাগল, হরিণ প্রভৃতি প্রাণীর শিং থাকে।
তিনিস – মেলায় নানা রকম জিনিস বিক্রি হয়।
ভারী বৃদ্ধ মানুষটি ভারী ব্যাগটি বইতে পারছিলেন না।
আশ্চর্য—বাঘ শিয়ালকে ছুটে আসতে দেখে আশ্চর্য
গ্রাস - মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিতে নেই।
ফাঁকি–তপনকাকু ভাইকে ফাঁকি দিয়ে সব বিষয় আশর লিখিয়ে নিয়েছেন।
আছাড়-কলার খোসায় আছাড় খেয়ে ছেলেটি পড়ে গেল।
সাজা—বিচারক অপরাধীর সাজা ঘোষণা করলেন।
গর্ত— ভাঙাচোরা বাড়িতে অনেক ইঁদুরের গর্ত দেখা যায়।
রাক্ষস- রূপকথার গল্পে রাক্ষস ও রাজপুত্রের কাহিনি থাকে ।
১. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা তোমার প্রিয় একটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা আমার প্রিয় একটি বইয়ের নাম টুনটুনির বই।
২. তাঁর লেখা গল্প অবলম্বনে তৈরি কোন সিনেমা দেখছ?
উঃ। তাঁর লেখা গল্প অবলম্বনে তৈরি গুপী গাইন বাঘা বাইন সিনেমাটি দেখেছি।
৩. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৩.১। হ্যাঁগা, তুমি কী খাও!-হাগলছানা খাঁড়কে কী ভেবে এমন প্রশ্ন করেছিল?
উঃ। ছাগলছানা ষাঁড়কে ছাগল ভেবে এমন প্রশ্ন করেছিল।
৩.২। গল্পে বাম হলো শিয়ালের মামা, আর নরহরি দাস' নিজেকে করে মামা দাবি করল?
উঃ। গন্ধে বাঘ হলো শিয়ালের মামা, আর 'নরহরি দাস' নিজেকে সিংহের মামা দাবি করল।
৩৩। ছাগলছানা বাঁড়ের সঙ্গে কেন বনে গিয়েছিল?
উঃ। ছাগলছানা ভালো ঘাস খাওয়ার জন্য যাঁড়ের সঙ্গে বনে গিয়েছিল।
৩.৪। ছাগলছানা সেদিন রাতে কেন বাড়ি ফিরতে পারেনি?
উঃ। বনের ভিতর চমৎকার ঘাস খেয়ে ছাগলছানার পেট এমন ভারী হয়ে পড়েছিল যে সে আর চলতে পারছিল না। এই কারণে সে সেদিন রাতে বাড়ি ফিরতে পারেনি।
৩.৫। অন্ধকারে শিয়াল ছাগলছানাকে কী মনে করেছিল?
উঃ। অন্ধকারে শিয়াল ছাগলছানাকে রাক্ষস মনে করেছিল।
৩.৬। বাঘ শিয়ালকে ফিরতে দেখে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল কেন?
উঃ। শিয়াল নিমন্ত্রণ খেয়ে সেইমাত্র বাড়ি গিয়েছিল কিন্তু তখনি তাকে হাঁপাতে হাঁপাতে ব্যস্ত হয়ে ফিরে আসতে দেখে বাঘ আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল।
৩.৭। শিয়াল কোন শর্তে বাঘের সঙ্গে ফিরতে চেয়েছিল?
উঃ। বাঘ যদি শিয়ালকে লেঞ্জের সঙ্গে বেঁধে নেয় তাহলে শিয়াল বাঘের সঙ্গে ফিরতে পারে। এই শর্তে শিয়াল ফিরতে চেয়েছিল।
৩.৮। ছাগলের বুদ্ধির কাছে বাঘ কী ভাবে হার মানল?
উঃ। শিয়ালকে দশটি বাঘ আনতে নির্দেশ দিয়েছে আর শিয়াল কিনা লেজে দড়ি দিয়ে বেঁধে একটি বাঘ নিয়ে এই ছাগলছানার এই কথা শুনে বাঘ ভয় পেয়েছিল। এইভাবে বাঘ ছাগলের বুদ্ধির কাছে হার মানলো।
৪. নীচের এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
উঃ। মানভক–ভয়ানক
রন্ধঅকা-অন্ধকার
শর্তসনা-সর্বনাশ
মণনিম্ন-নিমন্ত্রণ
তরারাস! সারারাত
নাগলছাছা-ছাগলছানা
নিজের ভাষায় বাক্য সম্পূর্ণ করো :
ডঃ। ৫.১। যেখানে মাঠের পাশে বন আছে আর বনের ধারে মন্ত্র পাহাড় আছে সেইখানে একটা গর্ভের ভিতরে একটা ছাগলছানা থাকত।
৫.২। সেই বনের ভিতরে খুব চমৎকার ঘাস ছিল।
৫.০ ছাগলছানাটা কালো ছিল, তাই শিয়াল অন্ধকারের ভিতর ভালো করে দেখতে পেল না।
2.৪। বাঘ শিয়ালকে বেশ করে লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়েছে। আর শিয়াল ভাবছে এবারে আর আমাকে ফেলে পালাতে পারবে না।
৫.৫। বাঘ ভাবে যে, নিশ্চয় শিয়াল তাকে ফাঁকি দিয়ে নরহরি দাসকে খেতে দেওয়ার জন্য এনেছে।
৬. একই অর্থের শব্দ পাশের শব্দযুক্তি থেকে খুঁজে নিচে পাশাপাশি লেখো
উঃ। বন- জঙ্গল। ছাগল-অজ। আশ্চর্য-অবাক। সাজা- শাস্তি। তৃণ- ঘাস।
৮. নীচের কথাগুলির মধ্যে কেনটি বাক্য ও কোনটি বাক্য নয় চিহ্নিত করে। ও
(বাক্য হলে ✓’ চিহ্ন দাও। বাক্য না হলে 'x' চিহ্ন দিয়ে শুদ্ধ করে লেখো।)
মাঠের পাশেই বন ✓
তাও কি হয়। ✓
নরহরি দাস এসে x নরহরি দাস আসছে
আমি সেখানে গেলে x আমি সেখানে যাব
ছাগলছানা বাড়ি ফিরে এল ✓
৯. এলোমেলো শব্দগুলিকে সাজিয়ে বাক্য তৈরি করো।
৯.১। গর্ভের থাকত একটা ভিতরে ছালছানা।
গর্তের ভিতরে একটা ছাগলছানা থাকত।
৯.২। কড়ি বাঘের দশ দিলুম তোকে।
উঃ। তোকে বাঘের দশ কড়ি দিলুম।
৯.৩। কিছুতেই আর গেল রাগ সে না।
সে রাগ আর কিছুতেই গেল না।
৯.৪। লাফেই দুই তুমি তাহলে পালাবে তো।
উঃ। তাহলে তুমি দুই লাফেই পালাবে তো!
৯.৫। সারারাত সারা করে ছুটোছুটি এমনি করে হলো।
উঃ। এমনি করে সারারাত ছুটোছুটি করে সারা হলো।
১০. বাক্যরচনা করো : মস্ত, জতু, চমৎকার, বুদ্ধিমান, নিমন্ত্রণ
মন্ত—রেফারনাথের পথে মস্ত পাহাড় দেখতে পাওয়া যায়।
জন্তু— কলকাতার অলিপুর চিড়িয়াখানার অনেক জন্তু দেখা যায়।
চমৎকার—হিমালয় পর্বতের চমৎকার দৃশ্য দেখে অবাক হতে হয়।
বুদ্ধিমান—অমল ভীষণ বুদ্ধিমান ছেলে।
নিমন্ত্রণ—আমার দিদির জন্মদিনে তোমার নিমন্ত্রণ রইল।
১২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো
১২.১। এই গল্পে কাকে তোমার বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে? তোমার এমন মনে হওয়ার কারণ কী?
উঃ। এই গল্পে আমার ছাগলছানাটিকে বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে। ছাগলছানাটি সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় গর্তে লুকিয়ে পড়ে, শিয়ালকে দেখে সে ভয় পেলেও তা বুঝতে না দিয়ে নিজেকে সিংহের মামা নরহরি দাস বলে পরিচয় দেয় এবং আরও বলে যে তার এক গ্রাসে পঞ্চাশটি বাঘ লাগে। এরপর যখন সে দেখে শিয়াল বাঘকে নিয়ে আসছে তখন সে বুদ্ধি করে বাঘকে শুনিয়ে বলে যে শিয়ালকে দশটি বাঘ আনতে কড়ি দিয়েছে আর শিয়াল কিনা লেজে দড়ি দিয়ে বেঁধে একটি বাঘ নিয়ে এল। এই শুনেই বাঘ ভয়ে ছুটে পালায়। অবস্থা বুঝে সাহস না হারিয়ে ছাগলছানাটি উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। এতেই তাকে আমার বুদ্ধিমান বলে মনে হয়েছে।
১২. ২। 'বুদ্ধি যায় বল তার'—এই কথাটির সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে এই গল্পে। এরকম অন্য কোনো গল্প --
মন্দার পর্বত এর দুর্দান্ত নামে এক সিংহ ছিল। সে সর্বদা আহারের জন্য পশুদেরকে হত্যা করত। একদিন সকল পশু মিলে সেই পশুরাজ কে বলল –
প্রভু! কি জন্য বহু পশু বদ করছেন? আমরা আপনার আহারের জন্য একটি করে পশু পাঠিয়ে দেবো।
তা শুনে পশুরাজ সিংহ বললেন, যদি তোমাদের এরকম অভিপ্রায় তাহলে তাই হবে।
তারপর প্রতিদিন পশুরা সিংহের জন্য একটি করে পশু পাঠিয়ে দিত।
এরপর একদিন এক বুড়ো খরগোশ এর পালা এলো। সে চিন্তা করছিল আমার মরন যদি নিশ্চিত হয় তাহলে তাড়াতাড়ি না গিয়ে বরং ধীরে ধীরে যাই। এরকম করাতে ক্ষুধাপীড়িত সিংহ ক্রোধে সেই শশক কে বলল কেন এত বিলম্ব করে এসেছ? খরগোশ বলল, প্রভু! আমার অপরাধ ছিল না। পথে আসতে আসতে আমি এক সিংহের দ্বারা ধৃত হয়েও পুনরায় আগমনের জন্য অঙ্গীকার করে প্রভুকে নিবেদনের জন্য আমি এখানে এসেছি।
তা শুনে সিংহ ক্রোধে প্রজ্বলিত হয়ে খরগোশ কে বলল-শীঘ্রই সেখানে নিয়ে গিয়ে দেখাও কোথায় সেই দুরাচার সিংহ। তখন খরগোশ সিংহকে এক গভীর কুপের সামনে নিয়ে গেল। “প্রভু আপনি নিজেই দেখুন” এই বলে গভীর কূপ জলে সেই সিংহের প্রতিচ্ছবি দেখালো। সেই মুহূর্তে সেই ক্রুদ্ধ সিংহ নিজেকে কূপ জলে নিক্ষিপ্ত করে।
নীতিবাক্য- বুদ্ধি যার বল তার, নির্বুদ্ধির বল কোথায়।
দেখো মদোন্মত্ত সিংহ শশকের দ্বারা পতিত হল।।
১৩. গল্প থেকে অন্তত পাঁচটি সর্বনাম খুঁজে নিয়ে লেখো এবং সেগুলি ব্যবহার করে একটি করে বাক্য লেখো।
উঃ। সে-সে তার কাঁধে হাত রাখল।
তার—তার সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাই।
তুমি—তুমি কি কাল আমার সঙ্গে বাজারে যাবে?
তোমার-তোমার চেয়ে আমার পোশাকটি সুন্দর।
আমি–আমি কাল বাবার সঙ্গে বেড়াতে যাব।
১৪. কারণ কী লেখো :
১৪.১। ছাগলছানা গর্ভের বাইরে যেতে পেত না।
উঃ। কারণ তাঁর মা তাকে ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, সিংহে খেয়ে ফেলবে বলে ভয় দেখাত।
১৪.২। যাঁড় এসে বলল, 'এখন চলো বাড়ি যাই।'
উঃ। যাঁড় ও ছাগল মিলে বনের ভেতর ঘাস খেতে খেতে সন্ধে হয়ে গেল।
১৪.৩। সে (শিয়াল) ডাবল বুঝি রাক্ষস-টাক্ষস হবে।
উঃ। অনেক রাত্রে শিয়াল এসে দেখল তার গর্ভের ভিতর কীরকম একটা জন্তু ঢুকে রয়েছে, ছাগলছানাটি কালো ছিল, শিয়াল অন্ধকারে ভালো করে দেখতে পেল না।
14.6। বাবা গো'? বলে সেখান থেকে ( শিয়ালের) দে ছুট।
উঃ। শিয়াল ভয়ে ভয়ে গর্তের ভিতর কে জিজ্ঞাসা করায়, ছাগলছানাটি বুদ্ধি করে উত্তর দিল 'লম্বা লম্বা দাড়ি, ঘন ঘন নাড়ি'। সিংহের মামা আমি নরহরি দাস, পঞ্চাশ বাঘে মোর এক-এক গ্রাস, এই কথা শুনেই শিয়াল দে ছুট।
১৪.৫। বাঘ ভয়ানক রেগে বললে, 'ৰটে, তার এত বড়ো আস্পর্ধা।
উঃ। শিয়াল হাঁপাতে হাঁপাতে বাঘ এসে বলল মামা আমার গর্তে এক নরহরি দাস এসেছে। তার পঞ্চাশ বাঘে এক গ্রাস।
১৫. নীচের বাক্যগুলিতে কোন কোন ভাব প্রকাশ পেয়েছে তা লেখো:
(বিস্ময়/ইচ্ছা/প্রশ্ন/বিবেক/উপদেশ/পরামর্শ বা নির্দেশ/ ভয়)
উঃ। ১৫.১। হ্যাগা, তুমি কী খাও? - প্রশ্ন
১৫.২। আমাকে সেখানে নিয়ে যেতে হবে। - নির্দেশ
১৫.৩। যাসনে! ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, সিংহে খেয়ে ফেলবে। - উপদেশ
১৫.৪। এখন চলো বাড়ি যাই। - ইচ্ছা
১৫.৫। শুনেইতো শিয়াল, ‘বাবা গো।' বলে সেখান থেকে দে ছুট। - ভয়
১৫.৬। কী ভাগনে, এই গেলো, আবার এখুনি এত ব্যস্ত হয়ে ফিরলে যে?' --বিস্ময়
১৭. শক্তি, বুদ্ধি, ও কাজের বিচারে বাঘ, শিয়াল ও ছাগলছানার আচরণ কেমন তা লেখো।
উঃ। বাঘ : বাঘের শক্তি সবচেয়ে বেশি, কিন্তু তার বুদ্ধি কম ছিল। নরহরি লাসের কথা শুনে শিয়ালকে লেজে বেঁধে সে ছুটে পালিয়ে গিয়ে ভীরুতা ও বোকামির পরিচয় নিয়েছে।
শিয়ালঃ- শিয়াল খুবই বুদ্ধিমান প্রাণী, তার শক্তিও আছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে ভালো করে না দেখে তার ছাগলকে ভয় পেয়ে যাওয়ায় বোকামির আচরণ দেখা গেছে।
ছাগলছানাঃ তুলনায় ছাগলছানাটি নিরীহ ও শক্তিহীন প্রাণী। কিন্তু প্রথমবার শিয়ালকে দেখে এবং পরে শিয়ালের সঙ্গে বাঘকে দেখে সে যে কথাগুলি বলে রক্ষা পেয়েছে। এ থেকে তার উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসের পরিচয় পাওয়া গেছে।
১৮. নিম্নলিখিত অংশে উপযুক্ত ছেদ ও যতিচিহ্ন বসাওঃ
খেয়ে তার পেট এমন ভারী হল যে সে আর চলতে পারে না সন্ধে হলে ষাঁড় এসে বলল এখন চলো বাড়ি যাই কিন্তু ছাগলছানা কী করে বাড়ি যাবে সে চলতেই পারে না তাই সে বললে তুমি যাও আমি কাল যাব।
উঃ। খেয়ে তার পেট এমন ভারী হল যে, সে আর চলতে পারে না। সন্ধে হলে ষাঁড় এসে বলল, 'এখন চলো বাড়ি যাই।' কিন্তু ছাগলছানা কী করে বাড়ি যাবে? সে চলতেই পারে না। তাই সে বলল, 'তুমি যাও, আমি কাল যাব।'
১৯. নীচের শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো ও
উঃ। মস্ত—ক্ষুদ্র , ব্যস্ত—সুস্থির , বাইরে—ভিতরে। নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস। লম্বা-থাটো। সর্বনাশ-লাভবান। দূর- কাছে
২০. এই গল্পে শিয়ালকে নাকাল হতে দেখা গেছে। তুমি আরও এমন দুটি গল্প সংগ্রহ করো যেখানে একটিতে শিয়াল তার বুদ্ধির জোরে জিতে গেছে এবং অন্যটিতে সে তা পারেনি।
উঃ। প্রথম গল্পঃ একবার কুমিরের খুব ইচ্ছা হল তার ছানাদের লেখাপড়া শেখাবার। তাই সে নিজের সাতটা ছানাতে সঙ্গে করে নিয়ে শিয়ালের বাড়িতে উপস্থিত হল। কুমিরকে দেখে ছিল বলল কী ভাই কী মনে করে? কুমির বলল, 'ভাই তুমি যদি আমার এই মূর্খ হোলগুলিকে একটু লেখাপড়া শিখিয়ে দাও তাহলে খুব ভালো হয়। শিয়াল বললো, সে আর বলতে! আমি সাতদিনে সাত জনকে পড়িয়ে পণ্ডিত করে দেন। সাতদিন ধরে শিয়াল কুমিরের ছানাগুলিকে একটা একটা করে খেয়ে ফেললো। এবারে সাতদিন পরে কুমির এসে দেখল শিয়াল পণ্ডিত হাওয়া। গর্তের ভিতর খালি তার ছানাদের হাড়গুলো পড়ে আছে। তখন তার খুব রাগ হল, আর সে চারবারে ছুটোছুটি করে শিয়ালকে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে খুঁজতে নদীর ধারে গিয়ে দেখল শিয়াল আর শিয়ালনি পার হচ্ছে। অমনি ‘দাঁড়া হতভাগা। বলে কুমির জলে ঝাঁপ দিয়ে শিয়ালের পিছনের একটা পা কামড়ে ধরল। বুদ্ধিমান শিয়াল তা বুঝতে পেরেই শিয়ালনিকে ডেকে বললে, দেখতো শিয়ালনি, আমার লাঠিটাকে ধরে কে টানাটানি করছে। একথা শুনে কুমির ভাবলে তাইতো পা ধরতে গিয়ে লাঠি ধরে ফেলেছি! শিপির লঠি ছোড়ে পা ধরি, এই ভেবে যেই সে শিয়ালের পা ছেড়েছে অমনি শিয়াল একলাফে ডাঙায় উঠে দৌড়, তারপর বনের ভিতর, তাকে কে আর ধরে!
দ্বিতীয় গল্প: শিয়াল ক্ষেতের আখ খেতে খুব ভালোবাসে, একদিন সে আগের ক্ষেতে ঢাকে একটি ভিমরুলের চাক লেগে সে ভাবল এই বুঝি! আখ গছের ফল। সে ভাবলে আহা! আখের কী চমৎকার ফল, যেতে না জানি কত মিষ্টি হবে। এই মনে করে দেই সে ভিমরুলের চাক খেতে গেছে, এমনি সব ভিমরুল বেরিয়ে কামড়ে তাকে মজা দেখাতে লাগল। শিয়াল তো প্রাণ যায়, ছোটে আর বলে কামের খেতে আর যাব না। তারপর যখন গায়ের ব্যথা একটু কমলো তখন সে ভাবল, মিষ্টি বলতে, ঐ ফলটার ভেতরে পোড়া ছিল আর তারাই আমাকে কামড়েছে। আগে যদি ফলটাকে নাড়িয়ে দিতুম তাহলে পোকাগুলো বেরিয়ে যেও। এই ভেবে সে খেতে গেল। 'আগে নাড়িয়ে দেব তারপর ফল খাব'। বলতে বলতে সে আখের খেতে দিয়ে লাঠি দিয়ে ভিমরুলের চাকে নাড়া দিয়েছে। অমনি আর যায় কোথায়, দলে দলে ভিমরুল এসে শিয়ালকে কমিয়ে আধমরা করে তবে ছাড়ল। সেই থেকে সে আর আখ খাবার নাম করত না।
২১. নরহরি দাস গল্পে কোন কোন প্রাণীর নাম খুঁজে পেলে? এদের খাদ্য ও বাসস্থান এবং স্বভাব উল্লেখ করো।
উঃ/ গল্পে ছাগল, ষাঁড়, শিয়াল, বাঘ ও সিংহের নাম পাওয়া গেছে।
ছাগলঃ একে বাড়িতে অনেকে পালন করে। এরা ঘাস, গাছের পাতা খায়। এরা খুব নিরীহ ও ভীতু স্বভাবের প্রাণী।
ষাঁড় - বড় ঘাস, লতাপাতা, খড় খায়। এরা বনে জঙ্গলে থাকে। অনেক গ্রামে এমনকি রাস্তাঘাটে ও এদের ঘুরতে দেখা যায়। এরা সাধারণত নিরীহ প্রাণী কিন্তু রেগে গেলে একটু ভয় দেখা যায়।
শিয়াল : শিয়াল মাংসাশী প্রাণী। এরা বনে জঙ্গলে, গর্তে ও ঝোপেঝাড়ে বাস করে। এরা খুব চালাক প্রাণী। ছোটেখাটো পশুপাখি শিকার করে হায়, হুক্কা হুয়া শব্দ করে বিশেষ সুরে এরা ডাকে।
বাঘ - বাঘ মাংসাশী প্রাণী, এরা শিকার ধরে খায়, প্রধানত বনে জঙ্গলে এরা বাস করে। বাঘ হিংস্র প্রাণী। শিকার ধরবার সময় এরা নিঃশব্দে চলাফেরা করে। বাঘ তীব্র শব্দে গর্জন করে
সিংহ - সিংহ হল প্রাণীদের রাজা। এরা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং জঙ্গলে বা পাহাড়ের গুহায় বাস করে। এর একটি লেজ আছে। এদের গায়ের রং হ্লুদ। এরা মাংসাশী প্রাণী। এরা ভীষণ গর্জন করে শব্দ করে।
২২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো:
২২.১ ছাগলছানার মা তাকে কঁভাবে সাবধান করত? তার ভয় কাটল কীভাবে?
উঃ। ছাগলছানাটা গর্ভের বাইরে যেতে চাইলে তার মা তাকে বলত, যাসনে। ভালুকে ধরবে, বাঘে নিয়ে যাবে, খেয়ে ফেলবে? এই সব কথা বলে সাবধান করত।
তারপর ছাগলছানাটা যখন একটু বড়ো হলো তখন তার ভয়ও কমে গেল ।
২২.২ বনে সন্ধে হয়ে এলে সেখানে কোন পরিস্থিতি তৈরি হলো?
উঃ। সন্ধে হয়ে এলে ষাঁড় ছাগলছানাটিকে বাড়ি ফিরতে বলল, কিন্তু ঘাস খেয়ে ছাগলছানার পেট এমন ভারী হল
যে সে আর চলতেই পারছিল না। তখন সে একটি গর্ত দেখতে পেয়ে তার ভিতর ঢুকে রইল।
২২.৩ ছাগলছানাকে শিয়াল ভয় পেল কেন?
উঃ। সন্ধে হয়ে যাওয়ায় ছাগলছানাটি যে গর্তে ঢুকেছিল আসলে সে গর্ভটি ছিল এক শিয়ালের। অনেক রাতে শিয়ালটি তার মামা বাঘের বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ খেয়ে ফিরে দেখল তার গর্ভের ভিতর কালো মতন কী একটা জন্তু ঢুকে রয়েছে। শিয়াল ভাবলে বোধহয় কোনো রাক্ষস, তাই সে জিজ্ঞাসা করলে গর্তে কে ও? ছাগলছানাটি জবাব দিল সিংহের মামা আমি নরহরি দাস, পঞ্চাশটা বাঘে আমার এক গ্রাস। এই শুনেই শিয়াল প্রচন্ড ভয় পেয়েছিল।
২২.৪ বাঘের উপর শিয়ালের রাগ হওয়ার কারণ দেখো।
উঃ। বাঘ শিয়ালকে লেজে বেঁধে যখন ভয়ে ছুটতে আরম্ভ করল, তখন শিয়ালের মাটিতে আছাড় খেয়ে, কাঁটার আঁচড় লেগে ও মাটিতে ঠোকর খেয়ে প্রাণ যাওয়ার অবস্থা হল। শিয়াল চেঁচিয়ে মামা আল আছে বলে বোঝাতে চেষ্টা করলে বাঘ ভাবতে লাগল নরহরি দাস পিছনে আসছে, তাই বাঘ আরও ছুটতে লাগল। সারারাত ছুটোছুটিতে শিয়ালের খুব শাস্তি হয়েছিল, সেই থেকে বাঘের ওপর তার ভীষণ রাগ হলো।
নরহরি দাস মূল্যায়নের জন্য অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
১। নীচের এলোমেলো বর্ণগুলি সাজিয়ে শব্দ তৈরি করোঃ গেগজিস, মাদ্ধিবুন, নরিহর, গাহভাত, ছুটিটোছ।
উঃ। গেগজিস—জিগগেস। মাদ্ধিবুন–বুদ্ধিমান। নরিহর নরহরি। গাহভাত—হতভাগা। ছুটিটোছু—ছুটোছুটি।
২। সমার্থক শব্দ লেখোঃ বন, বাঘ, ষাঁড়, রাত্রি।
উঃ। বন—অরণ্য, জাল, বনানী। বাঘ—শের, শার্দূল। ষাঁড়—ষণ্ড, বৃষ। রাত্রি—নিশি, রজনী, নিশা।
নরহরি দাস। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী । প্রশ্ন ও উত্তর
১। ছাগলছানাটি কোথায় থাকত? উঃ। ছাগলছানাটি মাঠের পাশে এক বনের ধারে এক পাহাড়ের গর্তে থাকত।
২। ছাগলছানা ষাঁড়কে কী দেখে কী ভেবেছিল? উঃ। ছাগলছানাটি ষাঁড়ের শিং রয়েছে দেখে তাকেও ছাগল ভেবেছিল।
৩। ছাগলছানা সন্ধে হলে কোথায় থেকে গেল?
উঃ। সন্ধে হলে ছাগলছানাটি এক গর্ত দেখতে পেয়ে তার ভিতর ঢুকে রইল।
৪। ৰাঘ কীভাবে শিয়ালকে নিয়ে গর্ভের কাছে গিয়েছিল?
উঃ। বাঘ শিয়ালকে বেশ করে লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে গর্তের কাছে গিয়েছিল।
৫। বাঘ কীভাবে পালাল? উঃ। বাঘ ভয়ে পঁচিশ হাত লম্বা এক এক লাফ দিয়ে শিয়ালকে সুদ্ধ নিয়ে পালাল।
৬। শিয়াল চেঁচিয়ে কাকে কী বলছিল?
উঃ। শিয়াল চেঁচিয়ে বাঘকে বলছিল 'মামা আল মামা আল', অর্থাৎ মামা জমিতে আল রয়েছে।
৭। শিয়ালের চিৎকার শুনে বাঘ কী করল?
উঃ। শিয়ালের চিৎকার শুনে বাঘ ভাবলো সেই নরহরি দাস বুঝি আসছে, তাই সে আরও বেশি করে ছুটতে লাগল।
৮। বাঘ ও শিয়াল রাতে কী করল?
উঃ। বাঘ ও শিয়াল সারারাত ধরে ছুটোছুটি করে সারা হয়ে গেল।
৯। 'পঞ্চাশ বাঘে এক গ্রাস'—কথাটির অর্থ কী?
উঃ। এর অর্থ হল এক গ্লাস খাবার মুখে তুলতে পঞ্চাশটি বাঘ লাগবে।
একদিন ছাগলছানা গর্তের বাইরে বেরিয়ে এসে দেখল একটি ষাঁড় ঘাস খাচ্ছে। ছাগলছানাটি আগে কখনও এত বড়ো জন্তু দেখেনি, এছাড়া যাঁড়টির শিং দেখে সে ভাবল ওটিও বুঝি ছাগল, খুব ভালো জিনিস খেয়ে এত বড়ো জন্তু হয়েছে। তাই সে ষাঁড়কে গিয়ে এই কথাটি জিগেস করেছিল।
১০। 'তোকে দিলুম দশ বাঘের কড়ি'-বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ। এই কথাটিতে বোঝানো হয়েছে দশটি বাঘ নিয়ে আসার কড়ি অর্থাৎ মূল্য বা দাম দেওয়া হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১। 'হ্যাগা, তুমি কী খাও?'— কে কাকে এই কথাটি কখন বলেছিল?
উঃ। ছাগলছানা ষাঁড়কে এই কথাটি বলেছিল।
২। 'আমি ঘাস খাই'--এই কথাটি কে বলেছিল? সেই কথায় কে কী উত্তর দিয়েছিল? সে কোথায় ঘাস খেত।
উঃ। এই কথাটি ষাঁড় ছাগলছানাকে বলেছিল।
তার এই কথা শুনে ছাগলছানা বলেছিল যে ঘাস তো তার মাও খায় কিন্তু সে ষাঁড়ের মতো এতো বড়ো হয়নি।
বনের ভিতর এক জায়গায় চমৎকার ঘাস ছিল, হাঁড়টি সেই ঘাস ডে।
৩। 'বটে, তার এত বড়ো আস্পা'—কে, কেন এই কথাটি বলেছিল?
উঃ। বাঘ এই কথাটি বলেছিল।
শিয়াল তার গর্তে গিয়ে যখন শুনল সিংহের মামা নরহরি দাস গর্তে বসে রয়েছে। তখন সে এক ছুটে বাঘের কাছে উপস্থিত হল, বাঘ শিয়ালকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল এবং জিজ্ঞাসা করল সে এখুনি ফিরে এল কেন? এর উত্তরে শিয়াল বললে মামা এক বিরাট সর্বনাশ হয়েছে। তার গর্তে কে এক নরহরি দাস এসেছে, তার নাকি পঞ্চাশ বাঘে এক গ্রাস। এই শুনে ভয়ানক রেগে বাঘ এই কথাটি বলেছিল।
৪। শুনেই তো ভয়ে বাঘের প্রাণ উড়ে গিয়েছে??—কী শুনে বাঘ ভয় পেয়েছিল? ভয় পেয়ে সে কী ভেবেছিল?
উঃ। বাঘ যখন শিয়ালকে লেজের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে তার গর্তের কাছে তাসছিল, ছাগলছানাটি তা দেখতে পেয়ে শিয়ালকে বলেছিল যে তাকে দশটা বাঘ আনতে কড়ি দেওয়া হল আর সে কিনা একটা বাঘ লেজে করে বেঁধে নিয়ে এল। এই শুনেই ভয়ে বাঘের প্রাণ উড়ে গিয়েছিল। ভয় পেয়ে বাঘ ভাবল শিয়াল বোধহয় তাঁকে ফাঁকি দিয়ে অর্থাৎ ভুলিয়ে নিয়ে নরহরি দাসকে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে এসেছে।
৫। আমি কখনও তোমাকে ফেলে পালাব না।'—কোন্ কথায় কে এই কথাটি বলেছিল? সে তার কথা রেখেছিল।
উঃ। শিয়াল হাঁপাতে হাঁপাতে ফিরে এসে বাঘকে নরহরি দাসের আসার কথা বলায় বাঘ তা শুনে ভয়ানক রেগে গেল। তখন সে শিয়ালকে বলেছিল চলো ভাগ্নে তাকে দেখার কেমন করে তার পঞ্চাশ বাঘে এক গ্রাস হয়। এই কথায় শিয়াল বাঘকে বলে যে সে গেলে যদি নরহরি দাস তাকে খেতে আসে তখন বাঘ তো দুই লাফে পালাবে আর শিয়াল তা পারবে
না। এই কথায় বাঘ বলেছিল তা কী হয়। আমি কখনও তোমাকে ফেলে পালাব না।
হ্যাঁ। বাঘ তার কথা রেখেছিল। লেজের সঙ্গে বাঁধা শিয়ালকে শুদ্ধ নিয়ে সে পঁচিশ হাত লম্বা এক লাফ দিয়ে পালিয়ে
৬। 'শিয়ালের সেদিন তারি সাজা হয়েছিল'—শিয়ালের কীরকম সাজা হয়েছিল?
উঃ। নরহরি দাসের কথা শুনে ভয় পেয়ে বাঘ পঁচিশ হাত লম্বা এক এক লাফ দিয়ে শিয়ালকে সুদ্ধ নিয়ে পালাতে লাগল। লেজে বাঁধা অবস্থায় শিয়ালের মাটিতে আছাড় খেয়ে, কাঁটার আঁচড় খেয়ে, ক্ষেতের আলে ঠোক্কর খেয়ে প্রাণ বেরিয়ে যাবার জোগাড় হল। শিয়াল চেঁচিয়ে বাঘকে বোঝাতে চাইল ‘মামা আল আছে'—বাঘ তা শুনে নরহরি দাস আসবে ভেবে আরও ছুটতে লাগল। এইভাবে সারারাত ধরে ছুটোছুটিতে শিয়ালের খুব সাজা হয়েছিল।
cover topics
নরহরি দাস ছবি
নরহরি দাস গল্পের বিষয়বস্তু
নরহরি দাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর pdf
নরহরি দাস প্রশ্ন উত্তর
নরহরি দাস কার্টুন ভিডিও
নরহরি দাস কে ছিলেন
নরহরি দাস এর প্রশ্ন উত্তর class 4
নরহরি দাস গল্পের প্রশ্ন উত্তর
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন