ছেলেবেলার দিনগুলি, লেখিকা - পুণ্যলতা চক্রবর্তী । chele belar din guli । Punyalata Chakrabarty
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
গল্প - ছেলেবেলার দিনগুলি
লেখিকা - পুণ্যলতা চক্রবর্তী
লেখিকা-পরিচিতি - লেখিকা পুণ্যলতা চক্রবর্তী ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর কন্যা। 'সন্দেশ' পত্রিকাকে কেন্দ্র করে যে একদল নতুন লেখক তৈরি হয়েছিলেন পুণ্যলতা ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি শিশু ও কিশোরদের জন্য সহজ-সরল ভাষায় লিখেছেন। তিনি ছিলেন সুকুমার রায়, সুবিনয় রায়চৌধুরী ও সুখলতা রাওয়ের সহোদরা। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ছেলেবেলার দিনগুলি, ছোট্টো ছোট্ট গল্প, রাজবাড়ি। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে এই লেখিকার জীবনাবসান হয়।
সারসংক্ষেপ - কাহিনিটিতে লেখিকা তাঁর নতুন বাড়িতে জ্যাঠতুতো, খুড়তুতো ভাইবোনদের নিয়ে দল বেঁধে নানারকম খেলা করতেন। এরকম একটি খেলা পটগুলটিশ ওয়ার, হাতের কোণের জলের ট্যাঙ্ক থেকে তোলা গঙ্গামাটি দিয়ে নরম কাদার গুলি বানিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা হত। হঠাৎই কুবুদ্ধি করে সেগুলি উনুনে পুড়িয়ে খেলা শুরু করতেই দু-পক্ষ সেই শক্ত গুলিতে আহত হতে লাগল এবং লেখিকাদের রান্নাঘরে যাওয়াই বারণ হয়ে গেল। লেখিকার জ্যাঠামশাই ছিলেন ভারী গম্ভীর মানুষ। সবাই তাকে খুব ভয় করে চলত। শোনা যেত তিনি ছিলেন মস্ত বড়ো খেলোয়াড়, গায়ে খুব জোর আর রাগও খুব। লেখিকারা পটগুলটিশ এর গোলাগুলি সিঁড়ির ছাতের সিলিং এ ছুঁড়ে ঘুঁটে দেওয়া খেলা খেলতেন। একবার জ্যাঠামশাই সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় থ্যাপ করে তার পায়ের কাছে কী পড়ায় তিনি চাকরকে দিয়ে আলো আনিয়ে উপর দিকে তাকিয়ে হাতের ছিরি দেখে সব বুঝতে পেরে হো হো করে হেসে উঠলেন। আরেকদিন লেখিকা ও তাঁর দাদা চোর পুলিশ খেলছেন। লেখিকার হাতের সাপমুখো বালা হয়েছে তার হাতকড়ি। এক ঝটকায় হাত ছাড়াতে গিয়ে তার নতুন বালা ভেঙে দু-তিন টুকরো হয়ে ছাতে ছড়িয়ে পড়ল, তা দেখে মা হেসে বললেন তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে। লেখিকা ছিলেন একটু 'দস্যি' তাই দাদাদের সঙ্গে সব হুড়োহুড়ি খেলায় তিনি মজবুত ছিলেন। তাঁর ক্রিকেট, হকি সব খেলার হাতেখড়িই ওই বাড়ির ছাতে শুরু হয়েছিল। আবার দিদিদের সঙ্গে পুতুল খেলতেও তাঁর ভালো লাগত। তাঁর মা নানারকম পুতুল দিয়ে সুন্দর করে দোতলা পুতুল ঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন। দিদিরা সুন্দর জামাকাপড়, পুতির গহনা তৈরি করত। পুতুলের বিয়েতে ছোটো ছোটো পাতায় করে ছোটো লুচি, মিষ্টি খাওয়া হত। একবার পুতুলের বিয়েতে রঙিন মোমবাতি থেকে পুতুল ঘরে এক অগ্নিকাণ্ড হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি জল ঢেলে আগুন নিভানো হল আর অল্পের জন্য পুতুলগুলো বেঁচে গেল। লেখিকাদের এক মজার খেলা ছিল 'রাগ বানানো'। হয়তো কারও উপর রাগ হয়েছে। কিন্তু কিছু করা যাচ্ছে না তখন সেই লোকটির সম্বন্ধে অদ্ভুত গল্প বানিয়ে বলা হত। তাতে লোকটির কোনো অনিষ্ট করা বা তার প্রতি বিদ্বেষ ভাব থাকত না। শুধুই মজার কথা, আর তাতেই তাঁদের সব রাগ ভেসে যেত, মনটা হালকা খুশিতে ভরে উঠত। তাঁদের আর একটা মজার খেলা ছিল কবিতার গল্প বলা। একজন একটা কোনো জানা গল্প নিয়ে প্রথম লাইনটা বানিয়ে বলবে। আরেকজন তার সঙ্গে মিল দিয়ে দ্বিতীয় লাইনটি বলবে তার পরের জন তৃতীয় লাইন এমনি করে গল্পটা শেষ করতে হবে। লেখিকার দাদা কখনও হার মানতেন না যতই শক্ত হোক না কেন তিনি চট করে মিলিয়ে দিতেন। ছোটোবেলা থেকেই লেখিকার দাদা কবিতা লিখতেন। তাই দাদার দেখাদেখি তারও কবিতা লেখার শখ হল। একটা খাতায় বেশ ফুল লতাপাতা এঁকে লুকিয়ে দু-একটা কবিতা তিনি লিখলেন, তারপর একটা গল্পও লিখতে আরম্ভ করলেন। একদিন দুপুরে এক ভদ্রলোক লেখিকার বাবার সঙ্গে দেখা করতে এসে টেবিলের উপর ফেলে আসা লেখিকার গল্প লেখার খাতায় অর্ধেক লেখা গল্পটার পাতায় ‘তারপর হলো কী’ বলে বাকী গল্পটা ভদ্রলোক নিজেই লিখে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সেই সময়ের একজন নামকরা লেখক নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত। কিন্তু লেখিকার মনে হল তাঁর গল্পটাই মাটি হয়ে গেল, মনের দুঃখে তিনি খাতাটাই ছিঁড়ে ফেললেন। লেখিকার বাবা বিদেশ থেকে মজার ছবি আর পদ্যে তাঁদের চিঠি লিখতেন, সবাই সেগুলো পড়তো, সে সব সংগ্রহ করা থাকলে তাই দিয়েই একটা মজার বই হতে পারত। এইভাবেই লেখিকা এই কাহিনির মধ্যে তাঁর শৈশবকালের আনন্দের দিনগুলির এক মজার বর্ণনা দিয়েছেন।
তথ্য জেনে রাখো
মুকুল—উনিশ শতকের শেষদিকে শিশুদের উপযোগী যেসব মাসিকপত্র প্রকাশিত হত তাদের মধ্যে 'মুকুল' অন্যতম। প্রখ্যাত সাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সম্পাদনায় 'মুকুল' প্রকাশিত হত। রচনার গ্রুপে, সহজ-সরল ভাষায় এবং চোখ ভোলানো ছবির জন্য 'মুকুল' সর্বপ্রথম শিশুদের জন্য প্রকাশিত মাসিকপত্রের জগতে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল।
প্রবাসী— ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় 'প্রবাসী' পত্রিকা প্রকাশিত হয়। মাসিক পত্ররূপে প্রবাসীতে উপন্যাস, ছোটোগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশিত হত। এই পত্রিকার অন্যতম আকর্ষণ ছিল রবীন্দ্রনাথের অজস্র রচনা। শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নব্য ভারতীয় শিল্পকলা বিষয়ক রচনাগুলি প্রবাসীতে ছাপা হত। সেকালের অনেক প্রখ্যাত সাহিত্যিক এই পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন।
হ য ব র ল—প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় রচিত 'হ য ব র ল', বাংলা সাহিত্যের একটি অসামান্য গ্রন্থ। সাধারণভাবে তাঁর লেখায় আজগুবি, উদ্ভট খেয়ালের পরিচয় মেলে। এই বইতে উদ্ভট কল্পনা আর বাস্তব জীবনকে চমৎকার ভাবে তিনি মিলিয়ে দিয়েছেন। কেবল শিশুরা নয়, সব বয়সের মানুষ সুকুমার রায়ের 'হযবরল' থেকে আনন্দ পায় ।
মধুপুর–পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত মধুপুর স্বাস্থ্যকর স্থান হিসাবে সুপরিচিত। মধুপুরের মনোরম পরিবেশ সকলকে আকর্ষণ করে। বহু বাংলা গল্প, উপন্যাস এবং লেখকদের অভিজ্ঞতায় পশ্চিমের জল-হাওয়ার কথা পাওয়া যায়। সেই পশ্চিমের অন্যতম একটি জনপদ মধুপুর।
পাঠ্যাংশের ব্যাকরণ ও নির্মিতি বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
শব্দার্থ : সাথী—সঙ্গী, বন্ধু। ওয়ার—ইংরেজি শব্দ, যুদ্ধ। কুবুদ্ধি–মন্দ বা খারাপ বুদ্ধি। আহত—আঘাতপ্রাপ্ত। বারণ—নিষেধ। সেঁটে—আটকে। পাল্লা—প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা। মস্ত—বিরাট। গুরুগম্ভীর—গভীর অর্থবিশিষ্ট। ছিরি—শী কথা থেকে এসেছে। এখানে ধরন বা অবস্থা বোঝাচ্ছে। হাতকড়ি—হাতে পড়ানোর লোহার বন্ধন। পুলিশ অপরাধীদের জন্য এটি ব্যবহার করে। হাতেখড়ি—লেখা শেখার প্রথম অনুষ্ঠান। দস্যি—দুষ্টু, দামাল। মজবুত—শক্ত। হুড়োহুড়ি—হইচই, তাড়াতাড়ি করা। টি-সেট—ইংরেজি শব্দ, চা-খাবার জিনিস। ডিনার সেট—ইংরেজি শব্দ, রাতের খাবার খাওয়ার সময়। নিশান – পতাকা, নিদর্শন। বিদ্বেষ —ঈর্ষা, হিংসা। হিংস্র-হিংসাকারী, ভয়ানক। অনিষ্ট—অপকার। নাকাল—অসহায়। হাস্যম্পদ—হাসির ও বিদ্রূপের পাত্র। উদ্ভট আজগুবি, অদ্ভুত। উপক্রম—অবস্থা। অস্থি-হাড়। স্বস্তি—আরাম। নিম্না-ঘুম। হরিদ্রা-হলুদ। দীর্ঘ—লম্বা। চলু-ঠোঁট। এক্সপার্ট—ইংরেজি শব্দ, অভিজ্ঞ। শখ-সাধ, ইচ্ছা। প্রবাসী—বিদেশে থাকে যে।
বিপরীত শব্দঃ- অভাৰ—প্রাচুর্য। জমা- খরচ। যুদ্ধ—–শান্তি। কুবুদ্ধি—সুবুদ্ধি। বিশ্রাম—অবিশ্রাম / পরিশ্রম। মৃদু – তীব্র। আলো-অন্ধকার। নতুন-পুরাতন। ভেঙে-গড়ে; জুড়ে। দস্যি—শাস্ত। মজবুত—ঠুনকো। সুন্দর-অসুন্দর, কুৎসিত। জ্বেলে—নিভিয়ে হিস্রে—নিরীহ। হালকা—ভারী। মিল—অমিল। শেষ—শুরু। শক্ত - নরম। স্বস্তি - আনচান / অস্বস্তি। নিদ্রা-অনিদ্রা। অর্ধেক-পুরো। বিদেশ—স্বদেশ।
বাক্য রচনা : --
গঙ্গামাটি- পূজার কাজে গঙ্গামাটি ব্যবহার করা হয়।
যুদ্ধ— যুদ্ধ মানুষের জীবনে ধ্বংস নিয়ে আসে।
বিশ্রাম- সারাদিন কাজের পর একটু বিশ্রাম করা দরকার।
আহত—দুর্ঘটনায় আহত মানুষের সেবা করা প্রয়োজন।
চ্যাপটা—গোবর দেওয়ালে চ্যাপটা করে আটকে শুকিয়ে নিয়ে ঘুঁটে তৈরি হয়।
খেলোয়াড়—সচিন একজন বিখ্যাত ক্রিকেট খেলোয়াড়।
কাঁচুমাচু—অন্যায় হয়েছে বুঝে লোকটি কাঁচুমাচু মুখে দাঁড়িয়ে রইল।
বালা- মহিলারা হাতে সোনার তৈরি বালা পারেন।
রান্নাবান্না - পরিবারে মা-কাকিমারা রান্নাবান্না করেন।
অগ্নিকাণ্ড—কাপড়ের কারখানায় এক ভয়ানক অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেছে।
বোকামি–বোকামি করে সে বেড়াতে গেল না।
হিংস্র—বাঘ একটি হিংস্র প্রাণী।
হাতে-কলমে (সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে)
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১. পুণ্যলতা চক্রবর্তীর কয়েকজন ভাইবোনের নাম লেখো।
উঃ। পুণ্যলতা চক্রবর্তীর কয়েকজন ভাইবোন হলেন সুকুমার রায়, সুবিনয় রায়চৌধুরী ও সুখলতা রাও।
২. তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উঃ। তাঁর লেখা দুটি বই হল ছেলেবেলার দিনগুলি, রাজবাড়ি।
৩. ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :
উনুন - আগুন
পটগুলটিশ - খেলা
সিঁড়ি - বাড়ি
ঘুঁটে - গোবর
লেখাপড়া - বই
৪. নীচের এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে লেখো :
উঃ। খাড়া লেপ - লেখাপড়া; টিলগু শ টপ—পটগুলটিশ ; ঘ ল পুতু র–পুতুলঘর ; রা ক ম না—নামকরা ;
গর গুরু ম্ভী-গুরুগম্ভীর।
৫. বন্ধনীর মধ্য থেকে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে আবার লেখো :
৫.১ মা সুন্দর করে (এক/দুই/তিন/চার) তলা পুতুল ঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
৫.২ তোমাকে দেখছি এবার (সোনার/তামার/লোহার/টিনের) বালা গড়িয়ে দিতে হবে।
৫.৩ হাতকড়ি পরায় (চোর/উকিল/শিক্ষক/পুলিশ)।
৫.৪ হ য ব র ল হলো একটি (খেলনা/ট্রেন/গাছ/বই)।
৫.৫ (যোধপুরে/বিজাপুরে/ভাগলপুরে/মধুপুরে) সেই রেল গাড়ির কবিতা লিখেছিলেন।
.উঃ। ৫.১ মা সুন্দর করে দুই তলা পুতুলঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
৫.২ তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে।
৫.৩ হাতকড়ি পরায় পুলিশ।
৫.৪ হ য ব র ল হলো একটি বই।
৫.৫ মধুপুরে সেই রেলগাড়ির কবিতা লিখেছিলেন।
৬. কোনটি বেমানান চিহ্নিত করো
৬.১ ঘুঁটে/উনুন /কামান/রান্নাঘর। উঃ। কামান। ৬.২ সিডি/চিলেকোঠা/বারান্দা/বাজার। উঃ। বাজার
৬.৩ আলমারি/হাতকড়ি/চোর/পুলিশ। উঃ। আলমারি। ৬.৪ জ্যাঠা/বাবা/দাদা/কাকা। উঃ। দাদা।
৭. ঘটনাক্রম অনুযায়ী সাজাও :
৭.১ খাওয়া সেরে এসে দেখি, পুতুল ঘরে সে এক অগ্নিকাণ্ড।
৭.২ দেখতে দেখতে ছাদটা কাদার খুঁটেতে ভরতি হয়ে গেল।
৭.৩ মনের দুঃখে খাতাটা ছিঁড়েই ফেললাম।
৭.৪ আর একটা মজার খেলা ছিল কবিতায় গল্প বলা।
৭.৫ অল্পের জন্য পুতুলগুলো বেঁচে গেল।
উঃ। ৭.২ দেখতে দেখতে ছাদটা কাদার খুঁটিতে ভরতি হয়ে গেল। ৭.১ যাওয়া সেরে এসে দেখি পুতুল ঘরে সে এক অগ্নিকাণ্ড। ৭.৫ অল্পের জন্য পুতুলগুলো বেঁচে গেল। ৭.৪ আর একটা মজার খেলা ছিল কবিতায় গল্প বলা। ৭.৩ মনের দুঃখে খাতাটা ছিঁড়েই ফেললাম।
৮. শব্দবুড়ি থেকে ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো।
৮.১ জোঠামশাইকেও বাড়ির ছেলেরা ভীষণ ভয় করতো ।
৮.২ হঠাৎ থ্যাপ করে কী একটা তার পায়ের কাছে পড়ল।
৮.৩ একদা বাঘের গলার ফুটেছিল অস্থি ।
৮.৪ চঞ্চু মানে ওস্তান, এক্সপার্ট।
৮.৫ সেঁক দেয় তেল মাখে, লাগায় হরিদ্রা ।
১. একটি বাকো উত্তর দাও :
৯.১ পাঠে উল্লিখিত নতুন বাড়িটি কোথায় ছিল?
উঃ। পাঠে উল্লিখিত নতুন বাড়িটি ছিল লেখিকার জ্যেঠামশাই ও পিসিমার বাড়ির কাছেই।
৯.২ সেই নতুন বাড়িতে কীসের অভাব ছিল না?
উঃ। সেই নতুন বাড়িতে খেলার সাথীর অভাব ছিল না।
৯.৩ লেখিকা ও তার সঙ্গীরা কোথা থেকে গঙ্গামাটি জোগাড় করেছিলেন?
উঃ। লেখিকা ও তাঁর সঙ্গীরা হাতের এককোণে খোলা জলের ট্যাঙ্ক থেকে গঙ্গামাটি জোগাড় করেছিলেন।
৯.৪ গঙ্গামাটি দিয়ে কী শুরু হল?
উঃ। গঙ্গামাটি নিয়ে গোলাগুলি বানিয়ে ভীষণ যুদ্ধ শুরু হল।
৯.৫ রান্নাঘরে উনুনের মধ্যে কী গুঁজে রাখা হতো?
উঃ। রান্নাঘরে উর্দুদের মধ্যে গঙ্গামাটি দিয়ে তৈরি গুলি গুঁজে রাখা হতো।
৯.৬ লেখিকার জ্যেঠামশাইয়ের গলার আওয়াজ কেমন ছিল?
উঃ। লেখিকার জ্যেঠামশাইয়ের গলার আওয়াজ ছিল গম্ভীর।
৯.৭ লেখিকার জ্যেঠামশাই সম্পর্কে কী শোনা যেত?
উঃ। লেখিকার জ্যেঠামশাই সম্পর্কে শোনা যেত যে, তিনি ছিলেন মস্ত বড়ো খেলোয়াড়, তাঁর গায়ে খুব জোর ছিল, আর রাগও ছিল খুব।
৯.৮ বাড়ির চাকর সিড়ির আলোটা উসকিয়ে দেওয়ার পর কী দেখা গিয়েছিল?
উঃ। বাড়ির চাকর সিঁড়ির আলোটা উসকিয়ে দেওয়ার পর একতাল থলথলে কালোমতন জিনিস দেখা গিয়েছিল।
৯.৯ ছোটোদের পুতুলের বিয়েতে কেমন খাওয়া দাওয়া হতো?
উঃ। ছোটোদের পুতুলের বিয়েতে ছোটো ছোটো পাতায় করে ছোটো ছোটো লুচি-মিষ্টি ইত্যাদি খাওয়া হতো।
৯.১০ দোতলা পুতুলঘর কে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছিলেন?
উঃ। লেখিকার মা দোতলা পুতুলঘর সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছিলেন।
৯.১১ কোন খেলার সময় লেখিকার ও তাঁর ভাইবোনদের মন হালকা খুশিতে ভরে উঠত?
উঃ। 'রাগ বানানো' খেলার সময় লেখিকার ও তাঁর ভাইবোনদের মন হালকা খুশিতে ভরে উঠত।
৯.১২ কীভাবে লেখিকার বালা ভেঙে গিয়েছিল?
উঃ। চোর পুলিশ খেলার সময় এক ঝটকায় হাত ছাড়াতে গিয়ে লেখিকার বালা ভেঙে গিয়েছিল।
৯.১৩ পুতুলঘরে কীভাবে আগুন লেগেছিল?
উঃ। পুতুলের বিয়েতে লেখিকা ও তাঁর ভাইবোনেরা মিলে ফুলপাতা, নিশান দিয়ে বিয়েবাড়ি সাজিয়ে ছোটো রঙিন মোমবাতি জ্বেলে দিয়েছিলেন, সেই মোমবাতির আগুন থেকে পুতুল ঘরে আগুন লেগে গিয়েছিল।
৯.১৪ সুন্দরকাকা লেখিকার দাদার পিঠ চাপড়ে কী বলেছিলেন?
উঃ। সুন্দরকাকা লেখিকার দাদার পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন 'চুঞ্চু মানে ওস্তাদ, এক্সপার্ট।”
৯.১৫ লেখিকার দাদার প্রথম কবিতার নাম কী?
উঃ। লেখিকার দাদার প্রথম কবিতার নাম 'নদী'।
৯.১৬ তাঁর দ্বিতীয় কবিতাটি দাদা কত বৎসর বয়সে লিখেছিল?
উঃ। তাঁর দ্বিতীয় কবিতাটি দাদা নয় বৎসর বয়সে লিখেছিলেন।
৯.১৭ লেখিকার বাবা বিদেশ থেকে কী পাঠাতেন?
উঃ। লেখিকার বাবা বিদেশ থেকে মজার মজার ছবি আর পদ্যে লেখা চিঠি পাঠাতেন।
১০. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো
১০.১ কীভাবে পটগুলটিশ খেলা চলত?
উঃ। ছাতের এককোণে খোলা জলের ট্যাঙ্ক থেকে তুলে জমা করা গঙ্গামাটি দিয়ে গোলাগুলি বানিয়ে দুটি দল করে। একে অপরের গায়ে সেই গুলি ছুঁড়ে পটগুলটিশ খেলা চলত।
১০.২ লেখিকার জ্যোঠামশাই কেমন মানুষ ছিলেন?
উঃ। লেখিকার জ্যেঠামশাইয়ের চেহারা আর গলার আওয়াজ ছিল গম্ভীর। শোনা যেত তিনি ছিলেন মস্ত বড়ো খেলোয়াড়। তাঁর গায়ে ছিল খুব জোর আর রাগও ছিল খুব।
১০.০ রাগ বানানো খেলাটা কীভাবে খেলতে হতো?
উঃ। লেখিকাদের একটি মজার খেলা ছিল রাগ বানানো। কারো উপর রাগ হলে যখন তার শোধ নিতে পারা যাচ্ছে না, তখন সেই লোকটির সম্বন্ধে অদ্ভুত গল্প বানিয়ে বলা হতো। তার মধ্যে কোনো বিদ্বেষ বা হিংসার ভাব থাকত না। সেই লোকটির কোনোরকম অনিষ্ট করার চিন্তাও এই খেলায় থাকত না। শুধু তার সম্বন্ধে মজার কথা বলা হতো। যত রকম বোকামি হতে পারে বা যত রকমে মানুষ নাকাল ও অপ্রস্তুত হয়ে হাস্যস্পদ হতে পারে সেই সবই লোকটিকে নিয়ে কল্পনা করা হতো। এতে হাসির চোটে রাগ-পালিয়ে যেত এবং মনটা হালকা খুশিতে ভরে উঠত।
১০.৪ কোন কোন খেলার কথা পাঠ্যাংশে খুঁজে পেলে?
উঃ। পটগুলটিশ ওয়ার, চোর পুলিশ, ক্রিকেট, হকি, পুতুল খেলা, রাগ বানানো, কবিতায় গল্প বলা ইত্যাদি খেলার
কথা পাঠ্যাংশে খুঁজে পেলাম।
১০.৫ কীভাবে পটগুলটিশের গুলি তৈরি হতো?
উঃ। হাতের এককোণে খোলা জলের ট্যাঙ্ক থেকে গঙ্গামাটি তুলে জমা করে রাখা হতো এবং তার থেকে গোলা-গুলি তৈরি করা হতো। পরে নরম কানার গুলিকে লাল করে পুড়িয়ে পটগুলটিশ গুলি তৈরি হতো।
১০.৬ 'তোমাকে দেখছি এবার লোহার বালা গড়িয়ে দিতে হবে।'—একথা কে বলেছেন? কোন প্রসঙ্গে তাঁর এই উক্তি? বক্তাকে তোমার কেমন মনে হয়েছে?
উঃ। একথা লেখিকার মা বলেছেন। একদিন লেখিকা ও তাঁর দাদা চোর পুলিশ খেলছিলেন। লেখিকা চোর সেজেছিলেন এবং তাঁর হাতের একটি সাপমুখো বালার একটি মুখ ফাক করে সেটিকে হাতকড়া বানিয়ে দাদা লেখিকাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ লেখিকা এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নেবার সময় তাঁর নতুন বালা ভেঙে দু-তিন টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। লেখিকা বালার টুকরোগুলি তাঁর মায়ের কাছে নিয়ে গেলে তিনি ওই কথাটি বলেছিলেন। লেখিকার মা ছিলেন খুব ভালো। তিনি ছোটোদের সবরকম বিষয়েসাহায্য করতেন এবং সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসতেন।
১০.৭ মেয়েদের খেলাধুলার কেমন ছবি পাঠাংশে খুঁজে পেলে?
উঃ। পাঠ্যাংশে মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গেই দল বেঁধে নানারকম খেলাধুলা করত। পটগুলটিশ ওয়ার, চোর পুলিশ এসব খেলা মেয়েরা ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলত। ক্রিকেট, হকি এই সব খেলাও তারা খেলত। আবার শুধু মেয়েরা পুতুল খেলত। মেয়েরা মিলেমিশে সুন্দর জামাকাপড়, পুঁতির গয়না তৈরি করত। পুতুলের বিয়ে দেওয়া হতো। সেখানে পাতায় করে ছোটো ছোটো লুচি মিষ্টি খাওয়া হতো। এছাড়া ছিল রাগ বানানো ও কবিতায় গল্প বলা খেলা।
১০.৮ ‘হ-য-ব-র-ল’-র স্রষ্টা কে? তাঁকে লেখিকা কীভাবে স্মরণ করেছেন?
উঃ। ‘হ-য-ব-র-ল’-র অষ্টা সুকুমার রায়। লেখিকা তাঁর দাদা সুকুমার রায়কে গল্পের মধ্যে বারবার স্মরণ করেছেন। তিনি লিখেছেন ছোটোবেলা থেকেই সুকুমার রায় কবিতা লিখতে শুরু করেন। আট বৎসর বয়সে তাঁর প্রথম কবিতা নদী আর নয় বছর বয়সে তাঁর দ্বিতীয় কবিতা টিক টিক টং “মুকুল” পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। সুকুমার রায় কখনও হার মানতেন না। লেখিকাদের মজার খেলা কবিতায় গল্প বলাতে যত শক্ত লাইন হোক না তিনি চট করে মিলিয়ে দিতেন। লেখিকাদের আর একটি মজার খেলা রাগ বানানোতেও দাদা সুকুমার রায় যে লোকটির উপর রাগ হয়েছে তার সম্বন্ধে অদ্ভুত গল্প বানিয়ে বলতেন। আর তাতেই লেখিকাদের সব রাগ মুছে গিয়ে মনটা হালকা খুশিতে ভরে উঠত।
১১. জ্যেঠতুতো, পিসতুতো, মাসতুতো— এইসব সম্পর্ক ছাড়াও অনেক সম্পর্ক আমাদের পরিবারগুলিতে তুমি যে কয়টি সম্পর্কের নাম জানো সেগুলি লেখো।
উঃ- এইরকম আরও কয়েকটি সম্পর্ক হল মামাতো, খুড়তুতো
১২. প্রতিশব্দ লেখো: সাথী, বিশ্রাম, মজা, সিঁড়ি, রান্নাঘর, নিশান।
চিঠি।
উঃ। সাথী—বন্ধু, সখা, মিত্র। বিশ্রাম-বিরাম, জিরানো, থামা, অবকাশ। মজা-কৌতুক, আনন্দ। সিডি-সোপান, ধাপ। রান্নাঘর – রসুইঘর, রন্ধনশালা। নিশান-পতাকা, ঝান্ডা, নিদর্শন।
১৫ বর্ণবিশ্লেষণ করো :
অভাব, উনুন, আহত, টুকরো, মোমবাতি, চিঠি।
উঃ- অভাব = অ + ভ +আ+ ব্
উনুন = উ + ন্ + উ + ন্
আহত = আ + হ্ + অ + ত + অ
টুকরো = ট্ + উ + ক্ + র্ + ও + ও
মোমবাতি = ম্ + ও + ম + ব + আ + ত + ই
চিঠি = চ + ই + ঠ + ই
১৪. সন্ধিবিচ্ছেদ করো
উঃ- স্বস্তি = সু + অস্তি, নগেন্দ্র = নগ + ইন্দ্র, আরেক = আর + এক।
১৫. নীচের গদ্যটিতে যতিচিহ্ন ব্যবহার করো : ধমক দিয়ে বললেন এটা আবার কী কোত্থেকে এল চাকর
কাঁচুমাচু হয়ে বলল আজ্ঞে ছেলেরা কী যেন খেলা করছিল।
উঃ। ধমক দিয়ে বললেন, 'এটা আবার কী, কোথেকে এল?' চাকর কাচুমাচু হয়ে বলল, 'আছে, ছেলেরা কী যেন খেলা করছিল।'
১৬. পাশের প্রতিটি বিষয় নিয়ে পাঁচটি করে স্বাধীন বাক্য লেখো গয়না, পরিবার, ঘুঁটে।
গয়নাঃ সাধারণত মেয়েরা গয়না পরে থাকেন। গয়না সোনা ও রূপা নিয়ে তৈরি হয়। আগেকার দিনে রাজারানি, জমিদাররা সবসময় গয়না পরে থাকতেন। দেবদেবীদের মূর্তিও আমরা গয়না পরা অবস্থায় দেখে থাকি। গয়না প্রতি পরিবারে মূল্যবান সম্পদ বলে মনে করা হয়।
পরিবারঃ মানুষ একটি পরিবার এর মধ্যে বেড়ে ওঠে। বাবা-মা ও গুরুজনদের নিয়েই আমাদের পরিবার। পরিবারে মধ্যে নানা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রতিটি পরিবার তাদের নিজস্ব নিয়ম ও সামাজিকতা মেনে চলে। অনেকগুলি পরিবার একসাথে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। আমার পরিবারে বাবাই কর্তা। আমাদের পরিবারে সদস্যসংখ্যা ৪ জন। আজকাল যৌথ পরিবার ভেঙে যাচ্ছে। আমাদের অফিসটা একটি পরিবারের মতো। মানুষ পরিবার ছাড়া থাকতে পারে না।
ঘুঁটে- ঘুঁটে তৈরি হয় গোরুর গোবর থেকে। গোবরকে সাপটা করে দেওয়ালের গায়ে আটকে ঘুঁটে দেওয়া হয়। গোবর শুকিয়ে গিয়ে ঘুঁটে হয়। ঘুঁটে উনানের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অনেক মানুষ ঘুঁটে তৈরি করে বিক্রি করেন। আজকাল ঘুঁটের ব্যবহার কমে গেছে। উনুন ধরাতে ঘুঁটে লাগে। ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে। তোমার বুদ্ধিটা একেবারে শুকিয়ে ঘুঁটে হয়ে গেছে।
১৭ বছরের কোন সময় কোন খেলা খেলতে তুমি ভালোবাসো সেই অনুযায়ী ছকটি পূরণ করো :
খেলা
গ্রীষ্মের সময়- রান্নাবাটি খেলি, ক্যারাম
বর্ষার সময় - ফুটবল, লুড়ো, কুমিরডাঙা।
শীতের সময় - ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট
বসস্তের সময় - চু-কিত কিত, রুমাল চোর
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
১। কোনটি বেমানান চিহ্নিত করো।
(ক) বাবা/দাদা /জ্যেঠামশাই/চাকর। (খ) গঙ্গামাটি /কাদা/ থলথলে / ঘুঁটে
(গ) হাঁড়িকুড়ি/হাতাবেড়ি/হাতেখড়ি/রান্নাবান্না। উঃ। হাতেখড়ি।
(ঘ) পটগুলটিশ/স্বাগবানানো/পুতুলের বিয়ে/হাতকড়ি।
(ঙ) ফুলপাতা/লতাপাতা/খাতার পাতা/ছোটো পাতা। উঃ খাতার পাতা।
২। নীচের এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে লেখো:
মা শাগটি = গঙ্গামাটি। হাবে তা ড়ি = হাতাবেড়ি । পাক্স এ র্ট = এক্সপার্ট।
অণ্ডকাগ্নি = অগ্নিকাণ্ড। চিৎকিসক = চিকিৎসক । সহগ্ৰং = সংগ্রহ।
৩। বন্ধনীর মধ্য থেকে ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :
(ক) নরম কাদার (ঢেলা/গুলি/গোলা) তে খেলা বেশ ভালোই চলছিল। (খ) মৃদু হেসে (কয়েকটা/দুয়েকটা/এক/আধটা) কথা বলতেন। (গ) চাকর (মাথানীচু/দুখনীচু/কাঁচুমাচু) হয়ে বলল। (ঘ) দাদাদের সঙ্গে যত সব (তাড়াহুড়ো/ হুড়োহুড়ি/ধরাধরি) খেলা ভালো লাগত। (ঙ) সেই লোকটির সম্বন্ধে কল্পনা করে আমরা (লুটোপুটি/কুটিপাটি/কুটোপুটি) হতাম। (চ) ছোটোবেলায় দাদার লেখা কবিতা ছাপা হয়েছিল (প্রবাসী/মুকুল/সন্দেশ) পত্রিকায়।
উঃ। (ক) গুলি। (খ) দুয়েকটা। (গ) কাচুমাচু। (ঘ) হুড়োহুড়ি। (ঙ) কুটিপাটি। (চ) মুকুল।
৪। পাঠটির মধ্যে বেশ কয়েকটি ইংরেজি শব্দ রয়েছে, যেমন—ট্যাঙ্ক। এরকম আরও কয়েকটি শব্দ পাঠ থেকে
খুঁজে নিয়ে লেখো। উঃ। সিলিং, ক্রিকেট, হকি, ডল, টি-সেট, ডিনার সেট, লাইন, এক্সপার্ট।
৫। পাঠের শেষে দেওয়া প্রাসঙ্গিক তথ্য অংশের লেখাগুলি পড়ে প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
(ক) মুকুল মাসিক পত্রটি কে সম্পাদনা করতেন?
উঃ। সাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকার।
(খ) প্রবাসী পত্রিকা কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়?
উঃ। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে।
(গ) প্রবাসী পত্রিকা কে সম্পাদনা করতেন?
উঃ। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়।
(ঘ) প্রবাসী পত্রিকার অন্যতম আকর্ষণ কী ছিল?
উঃ। এই পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের অজস্র রচনা প্রকাশিত হত।
(ঙ) মধুপুর কী জন্য পরিচিত?
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডে অবস্থিত মধুপুর একটি স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে সুপরিচিত।
• অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১। নতুন বাড়িতে কাদের দল জুটে গেল?
উঃ। নতুন বাড়িতে লেখিকার জেঠতুতো, খুড়তুতো ও পিসতুতো ভাইবোনেদের দল জুটে গেল।
২। কাকে ও বাড়ির ছেলেরা ভীষণ ভয় করত?
উঃ। জ্যেঠামশাইকে - ও বাড়ির ছেলেরা ভীষণ ভয় করত।
৩। লেখিকার হাতে কেমন বালা ছিল?
উঃ। লেখিকার হাতে সাপমুখো বালা ছিল।
৪। লেখিকাদের কোন খেলায় কোনো লোকের সম্বন্ধে অদ্ভুত গল্প বানিয়ে বলা হতো?
উঃ। ‘রাগ বানানো’ নামে একটি মজার খেলায়।
৫। কোন খেলাতে ‘বাঘ ও বক’ এর গল্প বলা হচ্ছিল?
উঃ। কবিতায় গল্প বলা নামে এক মজার খেলাতে।
৬। কার দেখাদেখি লেখিকার কীসের শখ হয়েছিল?
উঃ। দাদার দেখাদেখি লেখিকারও কবিতা লেখার শখ হয়েছিল।
৭। বড়ো হয়ে লেখিকা কার লেখা কোথায় পড়েছিলেন?
উঃ। বড়ো হয়ে লেখিকা প্রবাসী পত্রিকায় লেখক নগেন্দ্রনাথ গুপ্তের লেখা পড়েছিলেন।
৮। লেখিকার বাবা বিদেশে গেলে কী লিখতেন?
তিনি বিদেশ থেকে মজার ছবি আর' পদ্যে লেখিকাদের চিঠি লিখতেন।
30। কবিতায় গল্প বলা খেলায় লেখিকা ও তাঁর ভাইবোনেদের সঙ্গে কে খেলছিলেন?
উঃ। সুন্দরকাকা।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১। মনের দুঃখে খাতাটা ছিড়েই ফেললাম'—কোন্ ঘটনার ফলে লেখিকা খাতা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন?
উঃ। লেখিকার একটি কবিতা ও গল্প লেখার খাতা ছিল। একদিন দুপুরে গল্প লেখার সময় এক ভদ্রলোক লেখিকার বাবার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। লেখিকা বাবাকে ডেকে নিয়ে তাঁর খাতাটা টেবিলে ফেলে রেখে এসেছিলেন, পরে তাঁরা দুজনে বেরিয়ে যাওয়ার পর খাতা আনতে গিয়ে লেখিকা দেখেন তাঁর সেই অর্ধেক লেখা গল্পটার পাতায় 'তারপর হলো কি বলে' বাকী গল্পটা সেই ভদ্রলোক নিজেই লিখে শেষ করে রেখেছেন। ভদ্রলোক ছিলেন তখনকার একজন নামকরা লেখক নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত। কিন্তু তখন লেখিকার মনে হয়েছিল যে তাঁর গল্প লেখাটাই মাটি হয়ে গেল। সেই দুঃখে তিনি খাতাটা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন।
২। লেখিকাদের রান্নাঘরে যাওয়া বারণ হয়ে গেল কেন?
উঃ। লেখিকা ও তার ভাইবোনেরা মিলে গঙ্গামাটি দিয়ে গোলাগুলি বানিয়ে পটগুলটিশ ওয়ার নামে এক ভীষণ যুদ্ধের খেলা শুরু করেছিল। নরম কাদার গুলি একে অপরের গায়ে ছুঁড়ে ভালো খেলা হত। হঠাৎ কুবুদ্ধি করে তারা রান্নাঘরে নিভোনো উনুনে সেই গুলিগুলো গুঁজে দিয়ে বেশ লাল করে পুড়িয়ে নিয়ে সেই যুদ্ধ খেলা শুরু করল। সেই শক্ত পোড়া মাটির গুলির আঘাতে দু পক্ষই এমন আহত হতে আরম্ভ করল ফলে তাদের রান্নাঘরে যাওয়াই বারণ হয়ে গেল।
৩। কবিতায় গল্প বলা খেলাটি কীভাবে খেলা হতো?
উঃ। লেখিকাদের একটা মজার খেলা ছিল কবিতায় গল্প বলা। এই খেলার নিয়ম ছিল একটা কোনো জানা গল্প নিয়ে একজন প্রথম লাইনটি বানিয়ে বলবে, আরেজন তার সঙ্গে মিল দিয়ে দ্বিতীয় লাইনটি বলবে। তার পরের জন বলবে তৃতীয় লাইন, এমনি করে গল্পটি শেষ করতে হবে। যদি কেউ না পারে সে হেরে যাবে এবং তার পরের জন বলবে।
৪। লেখিকার পুতুলঘরের বর্ণনা দাও।
উঃ। লেখিকার মা খুব সুন্দর করে দোতলার পুতুলঘর সাজিয়ে দিয়েছিলেন। তাতে ছিল অনেক ডল পুতুল, কাচের পুতুল ও মাটির পুতুল। আর ছিল পুতুলের খাট বিছানা, চেয়ার-টেবিল, টি সেট, ডিনার সেট, পিতল ও মাটির অনেক হাঁড়িকুড়ি, হাতাবেড়ি এবং ঘরকন্না ও রান্নাবান্নার জিনিসপত্র।
৫। 'তাই দিয়ে মজার একটা বই হতে পারত।' কী দিয়ে মজার বই হতে পারত?
উঃ। লেখিকার বাবা যখন বিদেশে কোথাও যেতেন, তখন সেখান থেকে মজার মজার ছবি ও পদ্যে লেখিকাদের চিঠি লিখতেন, সেগুলি তাদের পড়া হয়ে গেলে অনেকেই সেগুলি নিয়ে পড়েন। লেখিকার আফশোস যদি সেই সুন্দর লেখাগুলি তখন সংগ্রহ করে রাখা যেত, তাই দিয়েই একটি মজার বই তৈরি হতে পারত।
৬। 'প্রবাসী' পত্রিকাটি কে সম্পাদনা করতেন? এই পত্রিকায় কী কী ছাপা হতো?
উঃ। ‘প্রবাসী’ পত্রিকাটি সম্পাদনা করতেন রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। এই পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের অজস্র রচনা ও শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নব্য ভারতীয় শিল্পকলা বিষয়ক রচনাগুলি ছাপা হতো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন